কমলগঞ্জে শ্মশান ভূমির মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ

  • মুদ্রণ

বিশ্বজিৎ রায়
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের দর্গাহপুর গ্রামে সরকারী খাস খতিয়ানভুক্ত জমির উপর  সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান ভূমির মাটি কেটে ব্যক্তিগত পুকুরের পার নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।

 

ইউএনও’র নির্দেশে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করেছে। কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের দর্গাহপুর গ্রামে গোবিন্দপুর মৌজার জে,এল,নং ২১, খতিয়ান-১-এর দাগ ৬১৪ ভুক্ত ২০ শতক ভূমির উপর হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি শ্মশান ঘাট রয়েছে। সুদীর্ঘকাল থেকে এ গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায় এ শ্মশান ঘাটে মৃতের শেষকৃত্য সম্পন্ন করে আসছে।

অভিযোগ করে অখিল কান্তি গোস্বামী, হরলাল শর্ম্মা ও বীরেন্দ্র দেবনাথ এ প্রতিনিধিকে বলেন, একই গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি আব্দুল বাছিত তার সহযোগীদের নিয়ে এ শ্মশান ভুমির মাটি কেটে নিজ পুকুরের পার নির্মাণ করছেন। প্রাথমিকভাবে প্রতিবাদ করলে উল্টো নানাভাবে হুমকির মুখে পড়েন এ গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।  তাই বাধ্য হয়ে এ সমস্যার থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য সাংবাদিকদের সহযোগীতায় গত ৭ মার্চ কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলগঞ্জ থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করে খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেন।

কমলগঞ্জ থানার ওসি অমূল্য কুমার চৌধুরীর নির্দেশে এ ব্যাপারে তড়িৎ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আয়মুছ আলীকে জরুরী ভিত্তিতে তদন্তপূর্ব্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। গত বুধবার বিকেলেই তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আয়মুছ আলী সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাটি কাটার কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে থানায় যোগাযোগ করার জন্য বলেন। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদ ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশি তদন্তক্রমে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আয়মুছ আলী সরজমিন তদন্ত করার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি দলিল পত্রের উপর নির্ভর করে। সুতরাং জমির দলিলপত্র যাচাই বাছাই শেষে সঠিক তথ্য বের হবে বলে তিনি জানান। তবে এ মুহূর্তে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে তিনি উপদেশ দিয়েছেন।

তবে অভিযোগ সম্পর্কে মুঠোফোনে (০১৭১১২৬০৫৮৯) অভিযুক্ত আব্দুল বাছিত বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়, তা ভিত্তিহীন। একসময় এসব ভূমি তাদের পৈত্রিক ছিল। এখানে কখনও শ্মশান ভূমি ছিল না। তাছাড়া ৬১৫ দাগের ভূমি তার ক্রয় করা। তিনি নিজের ক্রয়কৃত জমির মাটি কেটে পুকুর পার নির্মাণ করছেন। তিনি মনে করেন তাকে হেয় করার জন্যই কোন মহলের ঈশারায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কতিপয় লোক এ অভিযোগ করে।  কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টামূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উর্বর জনপদ কমলগঞ্জ উপজেলায় এ ধরনের নাক্কারজনক কাজ কঠোর হস্তে দমন করা প্রয়োজন।

সৌজন্যে: www.bangladeshnews24x7.com/বাংলাদেশনিউজ২৪x৭.কম/প্রতিনিধি/জাআ/জের/১২.০৩.২০১২/এসএকে

Share