উপকারভোগী এই চার পক্ষীয় অংশীদারিত্বে উপজেলার ফুলবাড়ী থেকে ভানুগাছ ধলই নদীর পুরাতন ব্রীজ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তায় প্রায় ৫ হাজার অর্জুন বৃক্ষ রোপণ করা হয়। বর্তমানে সারা দেশে বন বিভাগ স্থানীয়দের কমিশন দিয়ে পার্টনার ব্যাজ বনায়ন করছে। কিন্তু সব জায়গায়ই তা বনজ কাঠ জাতীয়। যা অল্প সময়ে বড় হয়, আর প্রচুর পরিমাণে লাভবান হওয়া যায়। কিন্তু প্রায় ২০ বছর আগে কমলগঞ্জ উপজেলার জনৈক জব্বার মিয়া ও ইমরান মিয়া পারিবারিকভাবে দায়িত্ব নেন লাউয়াছড়া বন থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত বনায়নের। তবে তারা লাভজনক কাঠের কোন প্রজাতি রোপণ না করে পুরো এলাকায় রাস্তার দু’পাশে তিন সারি করে ৬টি সারিতে প্রায় ৫ হাজার অর্জুনের চারা রোপণ করেন এবং এই উপকারভোগী ব্যক্তিদের পরিচর্যায় শতভাগ বৃক্ষই বেঁচে যায়। আশেপাশের গ্রামের মানুষ এই গাছগুলো থেকে শারীরিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন। গ্রামবাসী ও বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্জুন বৃক্ষ মানুষের হূদরোগ, রক্তের নিম্নচাপ, রক্ত আমাশয়, হজম শক্তি, চর্ম ও হাঁপানিসহ ১৫টি রোগের উপশম করে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে লাভের আসায় সামাজিক বনায়ন করেও গাছগুলোর রোপণকারীরা তা বিক্রি করছেন না। তবে কোন আয়ুর্বেদী কোম্পানী প্রাপ্তবয়স্ক গাছগুলো নিতে চাইলে তারা বিক্রি করবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার মহকুমা বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাসানুজ্জামান বলেন, ২০ বছর ধরে গাছগুলো শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ সড়কে রয়েছে। গাছগুলো চুরিও হয়নি। পাশাপাশি গাছের চামড়া (ছাল) কেটে নিয়ে উপকৃত হচ্ছেন এলাকার মানুষ। এই ঔষধি সামাজিক বনায়নটি বাংলাদেশের একটি অনুকরণীয় যা একদিকে সৃষ্টি করেছে ছায়াবৃক্ষ ও বনাঞ্চল। অন্যদিকে পাওয়া গেছে ভেষজ ওষুধের কাঁচামাল। এভাবে অংশীদারিত্বভিত্তিক সারা দেশে সরকারের ভূমিতে ভেষজ ওষুধের বনায়ন করা হলে দেশ হবে ভেষজ ওষুধে সমৃদ্ধ। পাশাপাশি তা বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে।
সৌজন্যে: দৈনিক ইত্তেফাক, মঙ্গলবার, ১০ জুলাই ২০১২, ২৬ আষাঢ় ১৪১৯